Friday, June 12, 2015

ডমরু-চরিত - ত্রৈলোক্যনাথ মুখোপাধ্যায়

"ডমরু-চরিত কথা অমৃত সমান, 
         স্বয়ং ডমরু ভনে শুনে ভাগ্যবান"

লেখক ত্রৈলোক্যনাথ মুখোপাধ্যায় (১৮৪৭-১৯১৯) বাংলা সাহিত্যের জগতে একটি বিশিষ্ট স্থান অলংকৃত করে আছেন তাঁর উদ্ভট রস-সাহিত্য সৃষ্টির কারণে। ত্রৈলোক্যনাথ মুখোপাধ্যায়ের জীবনের প্রথম অধ্যায় কেটেছিলো বিশেষ দু:খ-কষ্ট, দারিদ্র্যের মধ্যে দিয়ে। অবশ্য পরবর্তী কালে তিনি উচ্চশ্রেণীর সরকারী পদে কর্মরত হন, এবং প্রায় সমগ্র ইউরোপ ভ্রমন করেন বঙ্গবানিজ্যের প্রচারের উদ্দেশ্যে। বাংলা সাহিত্যের জগতে তিনি নিয়ে এসেছিলেন এক তাজা, নতুন রসের সন্ধান। তাঁর লেখা বিখ্যাত গল্পসমষ্টির মধ্যে রয়েছে: 'লুল্লু', 'কঙ্কাবতী', 'বাঙাল নিধিরাম', 'পাপের পরিনাম', 'নয়নচাঁদের ব্যবসা', 'ফোকলা দিগম্বর', 'ভূত ও মানুষ', ইত্যাদি। তবে তাঁর রচিত 'ডমরু-চরিত'-এর মতো অসম্ভব মজাদার চরিত্র বাংলা সাহিত্যের জগতে একান্তই বিরল।         

'ডমরু-চরিত' ত্রৈলোক্যনাথ মুখোপাধ্যায়ের শেষ লেখা - প্রকাশিত হয়েছিলো তাঁর মৃত্যুর চার বছর পরে, ১৯২৩ সালে। ডমরু বসবাস করেন দক্ষিণ কলকাতার একটি গ্রামে। তাঁর জীবনের প্রথমার্ধ কাটে নিতান্ত দারিদ্র্যের মধ্যে। কিন্তু পরবর্তী কালে তিনি বিচিত্র কৌশলে বেশ ধনী হয়ে ওঠেন। তাঁর সেই বিশেষ কৌশলগুলির মধ্যে একটি হলো 'কিপটেমি' - তিনি একটি পয়সাও বাজে খরচ করেন না। বিত্তবান হবার সাথে সাথে তাঁর নামেরও বদল ঘটে 'ডমরু' থেকে 'ডমরুধর' হয়ে যায়। তা, আমাদের প্রাণপ্রিয় ডমরুধর বাবু এখন পাকা ইমারতে বাস করেন। গত তিন বছর ধরেই তাঁর বাড়িতে দুর্গোৎসব হচ্ছে। কিন্তু কেন এই দুর্গাপুজো তাঁর বাড়িতে, সেই নিয়েই শুরু হয় তাঁর গপ্পো ! প্রতি বছর দুর্গা পঞ্চমীর সন্ধ্যাবেলায় বাড়ির দালানে বসে ডমরুধর তাঁর ইয়ারবকশিদের সাথে করে চলেন অসম্ভব, অমূলক রসেভরা, অদ্ভুত জগতের গল্পগাছা...   
   
...তিন বৎসর পূর্ব্বে আমি ঘোরতর বিপদে পড়িয়াছিলাম...

ত্রৈলোক্যনাথ মহাশয়ের বেশিরভাগ গল্পই বলা হয়েছে দুর্গাপুজোর দালানে, মায়ের মূর্তির সামনে। তাই আশ্বিন মাসের মিঠে-সোনালী রোদ ঢুকে পড়ে তাঁর নানান গদ্যের মধ্যে। 

যে বাঙালি 'ডমরু-চরিত' পড়েননি, তাঁর বাঙালিত্ব নিয়ে সন্দেহ জাগতেই পারে - এমন কি তাঁকে 'ইনকমপ্লিট' বঙ্গসন্তান বললেও অত্যুক্তি কিছু করা হবে না ! এই পোস্টে সেই বিগত অতীতের ডমরু চরিত্রটিকে আবার হাতের কাছে আনার সামান্য চেষ্টাটুকু করা হলো মাত্র। 

ডমরু-চরিত
ডমরু-চরিত (9 MB)








No comments:

Post a Comment